● মায়ের কাছে খোলা চিঠি ●
ছোট্ট ব্যবসায়ী লক্ষীবাবু নতুন প্রজন্ম সংঘের পরিচালনায় ষষ্ঠীর দিনে “মায়ের কাছে খোলা চিঠি” অনুষ্ঠানের ফলাফল ঘোষনা করতে করতে হঠাৎই থেমে গেলেন। একটু আগে যেই লোকটা এতো উচ্ছ্বাস ভরা কন্ঠে দর্শকের মন জয় করে চললেন….হঠাৎ সেই গলাটা একেবারেই নিশ্চুপ ! এমন দেহশালী যুবকের শরীর খারাপ তো একেবারেই নয়…. তাহলে কি বিজেতা মেয়েটাকে দেখে !
লক্ষীবাবু মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে সংঘের প্রত্যেককে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করলেন একটু তাড়াতাড়িই – যেন অনেককিছু বলার বাকি…
“সবাই নিজের ইচ্ছের কথা তুলে ধরেছেন । তার মাঝে একটি লেখা একেবারেই অন্য ধরনের, সে চায় তার বাবার মুঠোফোন হতে । কেন জানেন- তার বাবা করোনায় এখন বাড়িতে থাকা সত্ত্বেও, তাকে একবারেও কাছে টানে না … যখনই বাবাকে দেখে সেই ফোনেই ব্যস্ত ….একটুক্ষণ চেয়ে থাকলেই শুরু হয় ‘পড়াশুনা নেই, করোনা এসেছে বলে মাথায় উঠেছে নাকি?’… ‘মুঠোফোন হলে বাবার স্পর্শে তো থাকতে পারবো’ !”
লক্ষীবাবুর শান্ত গলাটা ধীরে ধীরে জোরালো প্রতিবাদী কন্ঠে পরিণত হয় -” সত্যিই তো, আমরা সময় পেলেই মুঠোফোনেই বন্দি থাকি । এখন আমাদের কাছে যন্ত্রই বেশি আপন হয়ে উঠেছে – তাইতো দিনের শেষেও, রাতে ঘুমাতে যাই মুঠোফোনকে সঙ্গে নিয়েই ।”
দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানাধিকারীদের পুরস্কার তুলে দেওয়ার পর তিনি বিজয়ীর নাম দেখে থতমত খেলেন – ” মৌ মাইতি !”.. .পরক্ষণেই ভাবেন এমন তার মেয়ের নামে আরও কতজনের নাম রয়েছে।
তিনি জোর গলায় তৃতীয় বারের জন্য ঘোষনা করেন- “মায়ের কাছে খোলা চিঠি” বিভাগে প্রথম হয়েছে…
একেবারে নিশ্চুপ । দর্শকদের ভিড়ের থেকে একটা মেয়ে মাথা নীচু করে চোখে জল নিয়ে মঞ্চের দিকে এগিয়ে চলেছে …. মেয়েটি আর কেউ নয়, লক্ষীবাবুরই একমাত্র কন্যা : মৌ……..
What do you think?
It is nice to know your opinion. Leave a comment.